সূর্য এবং নৈঃশব্দ্যের গান…

“Hello darkness, my old friend” গানটা শুনতে শুনতে যাচ্ছি। অথচ এখন ঝকঝকে সকালবেলা। চোখের সামনে লাল সূর্য! কিন্তু গানটার সাথে আমার চারপাশের কী যেন একটা মিল আছে! আমার চোখের সামনে একটা নতুন দিন শুরু হচ্ছে। আমার কানে বেশ শান্ত স্বরে একটা নতুন রিয়ালাইজেশনের কথা বলা হচ্ছে।

চোখের সামনে সূর্যটা একটু একটু করে ফিকে হচ্ছে। গাঢ় লালটা আস্তে আস্তে কমলা হয়ে গেল। চারপাশ যত উজ্জ্বল হয়, সূর্যের টকটকে ভাবটা তত কমে। আজই প্রথম খেয়াল করলাম, চারপাশকে উজ্জ্বল করতে গিয়ে সূর্য নিজের রং, সৌন্দর্য কমাতে বাধ্য হয়। দুপুর রোদের সূর্যটা তো জ্বলতে জ্বলতে প্রায় সাদাটে হয়ে থাকে। অনেকটা প্রৌঢ় জীবনের মতন। সবাইকে সার্ভিস দিতে দিতে আমাদের মা-বাবারা যেমন নিজের রংটা হারিয়ে ফেলেন। তারপর বার্ধক্যে আবার রং ফিরতে থাকে শৈশবের মত। মানুষ যেমন বুড়ো হলে শিশুর মত হয়ে যায়, সূর্যটাও তেমনি সূর্যাস্তের আগ দিয়ে সূর্যোদয়ের রঙ গায়ে জড়িয়ে ডুবে যায়। পূর্ণ একটা জীবনকাল কাটালে মানুষও আবারও তার দ্বিতীয় শৈশবে ফিরে যায়। বার্ধক্যের সময়টাতে সেও শিশুর মত আচরণ করতে থাকে।

এটা একটা নতুন উপলব্ধি। এই একই সূর্য এর আগে বহুবার দেখেছি। কিন্তু এই ভাবনাটা এর আগে কখনো মাথায় আসে নি। অর্থাৎ, সূর্যটার দিকে তাকিয়েছি, কিন্তু দেখি নি কোনদিন। গানের মধ্যেও অনেকটা একই কথা বলা হচ্ছে। People talking without speaking; People hear without listening…

মানুষের ক্ষেত্রেও বোধহয় এমনটা হয়। দিনের পর দিন যাকে পরিচিত বলে জানছি, তাকে একদিন হঠাৎ অন্যরকম লাগে। সঠিক মুহূর্তে সঠিক আলোতে মানুষটার অন্য একটা পরিচয় পাওয়া যায়। অস্তিত্ব নাড়িয়ে দেওয়ার মত পরিচয়।

অস্তিত্ব নাড়িয়ে দেওয়ার মুহূর্তে বুকের মধ্যে একটা সূর্যোদয় হয়। কখনো হয়তো সূর্যাস্ত হয়। কিন্তু সূর্য উঠুক বা ডুবুক, উপলব্ধির পরমুহূর্তে পৃথিবীটা আর আগের মত থাকে না।

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s