প্রথম গন্ধ হারানোর অনুভূতিটা বেশ অদ্ভূত।বেশিরভাগ মানুষই বডি-স্প্রে ব্যবহার করতে গিয়ে বুঝতে পারেন, তিনি আর গন্ধ পাচ্ছেন না।
গন্ধ পাওয়াটা কিন্তু দেখতে পাওয়া বা শুনতে পাওয়ার মতো অত্যাবশ্যকীয় কিছু নয়। গন্ধ না পেয়েও একটা মানুষ দিনের পর দিন কাটিয়ে দিতে পারে। কিন্তু কোভিডের জামানায় গন্ধের কদর বেড়ে গেছে। মানুষ মণিমুক্তা হারাতে রাজি আছে, কিন্তু গন্ধ হারাতে রাজি নয়।
তাই, প্রথম গন্ধ হারানোর উপলব্ধিটা একটা এপিফ্যানির মতো। আমি দুপুর বেলাতেও গন্ধ পাচ্ছিলাম। হঠাৎ সন্ধ্যা বেলায় লোশন মাখতে গিয়ে আর পেলাম না। অথচ এই লোশনটা কোকো ফ্লেভারের। এবং এর জন্যই আমি এটা বিশেষ করে ব্যবহার করি। বোতলটা নাকের কাছে এনে উপুড় করে ধরলাম। নাহ! কোন গন্ধ নাই। বডি-স্প্রে ছিটালাম। একবার মনে হল গন্ধ নাই, আর একবার মনে হল, আছে। হেক্সিসল থেকে যে গন্ধটা আসল, সেটা ঝাঁজ নাকি গন্ধ নাকি অতীতের স্মৃতি- তা বোঝা গেল না।
আরও কয়েকটি পরীক্ষা চালানোর পরে বোঝা গেল, আমার বর্তমান পৃথিবীতে গন্ধের আর কোন অস্তিত্ব নাই। যা আছে তা হল- গন্ধের স্মৃতি। আমার মন প্রবলভাবে সেই অতীতের স্মৃতি দিয়ে বর্তমানকে ছলনা করতে চাইছে।
আমার বাস্তব বুদ্ধি যা বোঝার তা বুঝে গেছে। বাকিটা মেসেজ পাওয়ার পর বোঝা গেল। একটি শতভাগ ইতিবাচক মানুষ হিসেবে ইতিবাচক রিপোর্ট পাবো- এটাই তো স্বাভাবিক।
আগামীকাল সরকারি রিপোর্টে যে সংখ্যাটি আসবে, তাতে আমাকে ধরা থাকবে। বাহ! কালকের তারিখ, রিপোর্ট- সবটার একটা পার্সোনাল আবেদন থাকবে আমার জন্য।
নিজেকে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ মনে হল।
এই কদিনে নিজস্ব কিছু স্ট্রাটেজি বের করে ফেলেছি- একটু দেরি করে ওষুধ খাই। যাতে রাতে দেরি করে জ্বরটা আসে। অতীতের কোভিড রোগীরাও আমাকে একই কথা বলছেন। তাঁরাও দেরি করে জ্বরের ওষুধটা খান। নইলে মাঝ রাতে জ্বর এসে ঘুমের ব্যাঘাত হয়।
আরও কী কী স্ট্রাটেজি বের করতে হবে, সেটা আস্তে আস্তে বুঝতে পারবো।
এখন পর্যন্ত ভাল আছি। এবং কোভিডের কারণে আমাকে ট্যুরে যেতে হবে না- এটা ভেবে ভীষণ ভাল লাগছে। আমার একই জায়গায় বারবার যেতে ভাল লাগে না। ঘরে বসে বই পড়ার অগাধ সময় পাওয়া গেল। আমার মতো আলসে মানুষদের জন্য এটা একটা স্বপ্নের জীবন।